টিপ টিপ করে বৃষ্টি হচ্ছে, সাথে দমকা হাওয়া। চাল, নারকেল, সুপারিগাছগুলো ঘন ঘন দোল খাচ্ছে, আকাশে ভীষণ মেঘ। মনে হচ্ছে এই মাত্র সূর্য ডুবে গেল; কিন্তু না, সূর্য ডোবার এখনো দু-তিন ঘণ্টা বাকি। সাজুদের বাসার সামনের আমগাছটায় এবার অনেক আম হয়েছে, পাকা আমগুলো টুপটাপ করে পড়ছে। আর কাঁচাগুলো বাড়ি খাচ্ছে আমে আমে। আম্মা সাজুকে নিয়ে আমতলায় যেতে ছিলেন না, উল্টো ভয় দেখালেন অনেক কিছুÑ গাছের ডাল ভেঙে মাথায় পড়তে পারে, সাপ পোকে কাটতে পারে, বজ্রাহত হয়ে সর্বাঙ্গ অবশ হয়ে যেতে পারে; কিন্তু সাজুর ইচ্ছে হয় আমতলায় বৃষ্টির দিনে আম কুড়াতে। বনিরা বস্তিতে থাকে। ওরা ছয় ভাই-বোন। বাবা-মায়ের আদর ওরা ঠিকমতো পায় না। এমনিতেই অভাবের সংসার ওদের। সাজুদের স্কুলে যাওয়ার পথে বনিদের বাড়ি। একখানা চালা দিয়ে তৈরি ঘর। ছাউনি ঝড়ে উড়ে গেছে। বনি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সাজুদের আমতলার পাশে। একা একা বৃষ্টিতে ভিজছে ও। গায়ে একটা আধা ছেঁড়া পুরনো গেঞ্জি, বৃষ্টিতে ভিজে গায়ের সাথে সেঁটে গেছে। সাজু ওকে ওভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখে বললÑ এই বনি, তুমি ওভাবে বৃষ্টিতে ভিজছো কেন? বনি কোনো জবাব দিলো না। হয়তো বা বৃষ্টির জন্য শুনতে পায়নি। বনির আসলে লোভ হয়েছে আমতলায় বিছানো পাকা আমগুলোর প্রতি, টুকটুকে লাল রঙের দুটো আম গাছতলায় পাশাপাশি শুয়ে আছে। আম দুটো দেখে লোভ সামলাতে পারল না বনি। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল আমের দিকে। অবশেষে আম দুটো কুড়িয়ে নিলো বনি। সাজু দেখেও কিছু বলল না। কিন্তু আম্মা দেখতে পেয়ে কাজের ছেলে কাদেরকে বলল, ‘এই কাদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিস কী? ছেলেটাকে দৌড়ে ধর না। দেখছিস না, পাকা আম দুটো নিয়ে সে পালাচ্ছে।’ কাদের পেছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো বনিকে। ও ড্রেনের ময়লার মধ্যে পড়ে গেল কিন্তু আম ছাড়ল না। কাদের বনিকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকল। অবশ হয়ে গেল বনির হাত-পা। ও এমনিতেই ঠাণ্ডায় আড়ষ্ট। পাকা আম দুটো নিয়ে ফিরে এলে কাদেরের প্রতি আম্মা ভীষণ সন্তুষ্ট হলেন। সাজুর এ দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। ও চেয়েছিল আম দুটো নিয়ে দ্রুত আম্মার দৃষ্টির বাইরে চলে যাক বনি। কিন্তু পারল না, কাদেরের হাতে ধরা পড়ে গেল। সেই থেকে সাজু আর আম ছোঁয় না। শুধু দুধভাত খেয়ে উঠে যায়। আম্মু আম না খাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সাজু কোনো জবাব দেয় না। কেন যে হঠাৎ সাজুর আমের প্রতি অনীহা হলো, আম্মা তা বুঝতে পারলেন না। কারণ হাতড়িয়েও তিনি ব্যর্থ হলেন, ক’দিন পর আম্মা সাজুকে দুপুরে খাওয়ার সময় বললেন, ‘কী ব্যাপার সাজু, ক’দিন হলো লক্ষ করছি তুমি গাছের আম খাচ্ছো না।’ সাজু আমতা আমতা করে বলল, ‘কাল স্কুল থেকে ফিরে এসেই খাবো আম্মা।’ সাজু বনিদের বস্তি চেনে। ও স্কুলে যাওয়ার পথে বনিকে খুঁজে বের করল। সাজু বনিকে বললÑ ‘বনি, আজ বিকেলে তুমি আমার সাথে আমাদের বাসায় যাবে।’ বনি বলল, ‘তোমাদের বাসায় যাবো তোমার আম্মার মার খেতে।’ সাজু অভয় দিয়ে বললÑ ‘তোমার কোনো ভয় নেই বনি। আমিই তোমাকে সাথে করে নিয়ে যাবো।’ বনি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায়। স্কুল থেকে ফেরার পথে বনিকে নিয়ে বাসায় ফেরে সাজু। আম্মা ভেতরে ছিলেন। বনিকে বাইরে দাঁড় করিয়ে সাজু সোজা চলে গেল আম্মার কাছে। আম্মা বললেনÑ ‘তুমি বোধ হয় কিছু বলবে সাজু!’ সাজু মাথাটা নিচু করে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলল, ‘আমাকে দশটা পাকা আম দেবেন আম্মা’! আম্মা বললেন, ‘দশটা পাকা আম নিয়ে তুমি কী করবে?’ সাজু বলল, ‘আমগুলো আমি বনিকে দেবো আম্মা। ওরা গরিব মানুষ। পয়সা দিয়ে ওরা কিনে খেতে পারে নাÑ সেদিন আমাদের আমতলা থেকে দু’টি আম কুড়িয়ে নিতেই কী মারটাই না মেরেছিল কাদের ভাই। ওদেরও তো খেতে ইচ্ছে করে আম্মা।’ আম্মা রীতিমতো অবাক হলেন। কোনো কথা না বলে তিনি ভাবতে থাকেন অনেক কিছু। আম্মার আর বুঝতে বাকি থাকল না এ কয়দিনের আম না খাওয়ার কারণ। আম্মা অনড় দেখে সাজু পুনরায় বলল, ‘দশটি আম যদি বনিকে না দেন, তাহলে আমি আর কোনো দিন আম স্পর্শ করব না।’ আম্মা আর কথা না বাড়িয়ে বনিকে দেয়ার জন্য পাকা আম আনতে স্টোর রুমের দিকে পা বাড়ালেন।
গ্রামীনফোন সেলবাজারে ঢুকে দেখি ৬৫/-টাকা কেজি দরে বাগানের বিষমুক্ত আম বিক্রি হচ্ছে।
ফোন করলাম। জানতে চাইলাম, "কিভাবে আম পাবো?"
অপর প্রান্ত রাজশাহী থেকে হুমায়ুন ভাই বললেন, "ভাই আমি আপনার সাথে রাতে কথা বলবো" অপেক্ষায় থাকলাম।
এক সময় ঠিকই হুমায়ুন ভাইয়ের ফোন আসলো।
ব্লগার লগ ইন
ব্লগ পুঞ্জিকা
ব্লগ ট্যাগ
আরও পড়ুন
-
আম ফলের অবদান
-
আম সংরক্ষণে রাজশাহীতে হিমাগার স্থাপনের দাবি
-
কিভাবে ছাদে টবে আম বাগান করবেন
-
এবার দেখা যাবে বেগুনি রঙের আম
-
আম রপ্তানিতে সমস্যাগুলো কোথায়?
-
প্রনিং পদ্ধতিতে ফলজ গাছ ছাটাই
-
চাঁপাইনবাবগঞ্জে টানা ৭ দিনের বর্ষনে আম ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
-
মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে সেই আম গাছটি
-
পাকা আম সংরক্ষণের উপায়
-
আমে ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত
-
মুকুলের মৌ-মৌ গন্ধে ভরা এখন মেহেরপুরের আম বাগানগুলো
-
রাজশাহী গত বারের তুলনায় আম ভাল হওয়ার বিশ্বাস ব্যাসায়ীদের…
-
দোহারে আম আছে মাছি নেই
-
আদিযুগে প্রাকৃতিক ভাবে আম পাকাতে ব্যবহার হতো আশ শেওড়া
-
ফ্রুট ব্যাগিং প্রযু্িক্ত ব্যাবহারের ফলে আম গাছে কমেছে কীটনাশকের ব্যবহার
-
ফাল্গুনের হঠাৎ বৃষ্টি,কক্সবাজারে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
-
আমের ফলন বৃদ্ধির কৌশল
-
আমের ফলন কমার আশঙ্কায় কীটনাশক ব্যবহার বাড়ছে
-
কবিতা-আম পেকেছে গাছে
-
আমের মুকুল ঝরা রোধে যা করবেন
-
আম ও কাঁঠাল গাছে মুকুল ঝরা রোধে করণীয়
-
সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় অনেক আম নষ্ট হচ্ছে
-
বারমাসি আম ( 12 Masi Mango )
-
৩ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা
-
আম রফতানির পরিকল্পনাআছে সরকারের
-
আম বাগানে আদৌ ফল ধরে না বা খুবই কম ফল দেয় সে ধরণের বাগানকে ফল উৎপাদনক্ষম করে তোলার পদ্ধতি
-
ভাল আম পেতে যত্ন বছর ভর
-
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছে গাছে ‘আমের গুটি’
-
দেশের সবচেয়ে বড় আমগাছটি দেখতে যাবেন কিভাবে? কোথায় থাকবেন, কোথায় খাবেন বিস্তারিত
-
বাঘায় পাখির ‘বাসাভাড়া’ বছরে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন
-
গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে দিনাজপুরে আম ও লিচুর ফলনে বিঘ্ন হওয়ার সম্ভবনা
-
দেশে অনেক জাতের দুর্লভ আম আর নেই
-
বারি-১৪ আম
-
রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম
-
কাটিমন আম এর সামান্য পরিচয়
-
আম কুড়াতে সুখ
-
বাংলাদেশে আমের বর্তমান অবস্থা
-
আমের ভালো ফলন পেতে এ সময়ে করণীয়
-
ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
-
ভোলাহাটে বছরজুড়ে পাওয়া যাবে আম
-
নাম ডক মাই জাতের আমের বৈশিষ্ট্য ও কিভাবে চাষ করবেন
-
পাহাড়ে বাম্পার ফলন। ৮০০ কোটি টাকার আম নিয়ে উদ্বেগ
-
আমের ফুল ও ফল ঝরা রোধের উপায়
-
সৈকতে ‘রুপালি’ আম
-
আমের বিভিন্ন ব্যবহারবিধি ও উপকারিতাসমূহ
-
আমে আর পোকা ধরবে না, নষ্টও হবে না
-
কানসাটে আশ্বিনা আমের জমজমাট বাজার
-
মৌসুমী ফল আম
-
শহর জুড়ে বিক্রি হচ্ছে কেমিক্যাল মিশ্রিত আম
-
বারোমাসি আম বারিআম-১১ সম্পর্কে কিছু তথ্য। বারি আম ১১ এর বিশিষ্ট্য
সর্বশেষ মন্তব্য
-
আর খাইয়েন না। এক লাখ পুরা হলেই আজরাইল এসে ধরবে।
Written by মিজানুর on Friday, 29 May 2020 16:47 এক বসাতে ১০০ ল্যাঙড়া আম খেয়েছি – লোটাস কামাল -
Nice post, very interesting. Good work , If you have…
-
এই আম কোন মাসে পাকে
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
How can this be done?
-
মনজুরুল হক ভাইয়ের নাম্বারটা দেবেন
-
হিমসাগর কত করে??
-
5kg am lak ba gser
-
আঁচার আমার খুব পছন্দের। আমি একদিন এটা বানিয়ে নিব। ধন্যবাদ।
-
খুব ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ লেখককে।
-
ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আপনার জার্নির কথা শুনে... আর আমরা ঘরে…
-
চিন্তা করা যায়??
-
কৃষি কর্মকর্তারা কি বেতন খাচ্ছে আর ঘুমা্চ্ছে....
-
আমার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে.. আমি কি আম চাষ করতে পারবো?
